Course Content
অধ্যায় ২: প্রাণীর পরিচিতি (Introduction to Animals)
0/35
অধ্যায় ৩: মানব শারীরতত্ত্ব – পরিপাক ও শোষণ (Human Physiology – Digestion and Absorption)
অধ্যায় ৪: মানব শারীরতত্ত্ব – রক্ত ও সঞ্চালন (Human Physiology – Blood and Circulation)
অধ্যায় ৫: মানব শারীরতত্ত্ব – শ্বাসক্রিয়া ও শ্বসন (Human Physiology – Respiration and Breathing)
অধ্যায় ৬: মানব শারীরতত্ত্ব – বর্জ্য ও নিষ্কাশন (Human Physiology – Excretion and Elimination)
অধ্যায় ৭: মানব শারীরতত্ত্ব – চলন ও অঙ্গচালনা (Human Physiology – Movement and Locomotion)
অধ্যায় ৮: মানব শারীরতত্ত্ব – সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ (Human Physiology – Coordination and Control)
অধ্যায় ৯: মানব জীবনের ধারাবাহিকতা (Continuity of Human Life)
অধ্যায় ১০: মানবদেহের প্রতিরক্ষা (Defense Mechanisms of the Human Body)
অধ্যায় ১১: জীনতত্ত্ব ও বিবর্তন (Genetics and Evolution)
অধ্যায় ১২: প্রাণীর আচরণ (Animal Behavior)
জীববিজ্ঞান 2য় পত্র HSC Biology 2nd paper Revision Note
About Lesson

রূপান্তর (Metamorphosis)

“পতঙ্গের ভূণ যখন কয়েকটি ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ দশা প্রাপ্ত হয় তখন এ ধরনের ভ্রূণোত্তর পরিস্ফুটনকে রূপান্তর বলে। রূপান্তর প্রধানত দুধরনের- ১। অসম্পূর্ণ ও ২। সম্পূর্ণ রূপান্তর ।

১. অসম্পূর্ণ রূপান্তর (Incomplete metamorphosis) : (যে রূপান্তরে একটি পতঙ্গ ডিম ফুটে বেরিয়ে কয়েকটি নিক্ষ (শিশু)দশা অতিক্রমের পর পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গে পরিণত হয় তাকে অসম্পূর্ণ রূপান্তর বলে। প্রত্যেক নিম্ফ দশা দেখতে প্রায় পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গের ক্ষুদ্র প্রতিরূপের মতো দেখায়, কিন্তু এগুলো ডানা ও জননাঙ্গবিহীন থাকে এবং স্পষ্ট বর্ণপার্থক্য প্রদর্শন করে। অসম্পূর্ণ রূপান্তরের শিশু অবস্থায় প্রাণীকে নিম্ফ (nymph) বলে। উদাহরণ- ঘাসফড়িং ও তেলাপোকার রূপান্তর।

২. সম্পূর্ণ রূপান্তর (Complete metamorphosis) : যে রূপান্তরে শিশু প্রাণী ও পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর মধ্যে কোনো আঙ্গিক মিল থাকে না এবং ব্যাপক পরিবর্তনের মাধ্যমে শিশুপ্রাণী পূর্ণাঙ্গ অবস্থাপ্রাপ্ত হয়, সে ধরনের রূপান্তরকে সম্পূর্ণ রূপান্তর বলে। এ ক্ষেত্রে রূপান্তরের ৪টি সুস্পষ্ট ধাপ হচ্ছে ডিম লার্ভা পিউপা →ইমোগো (পূর্ণাঙ্গ)” সম্পূর্ণ রূপান্তরে শিশু অবস্থায় প্রাণীকে লার্ভা (larva) বলে। উদাহরণ- মৌমাছি ও প্রজাপতির রূপান্তর ।

ঘাসফড়িং-এর রূপান্তর অসম্পূর্ণ বা হেমিমেটাবোলাস (hemimetabolous) ধরনের কারণ এদের অপরিণত নিম্ফ আংশিক পরিস্ফুটনের মাধ্যমে কয়েকটি নিম্ফ দশা পেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-য়ে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ ঘাসফড়িংয়ের জীবন ইতিহাসে তিনটি ধাপ রয়েছেঃ ডিম → নিম্ফ পূর্ণাঙ্গ প্রাণী ।

ডিম ফুটে যে তরুণ ঘাসফড়িং বেরিয়ে আসে তাকে নিম্ফ (nymph) বলে )নিম্ফে ডানা ও জননাঙ্গ থাকে না,সদ্য পরিস্ফুটিত নিম্ফের কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল থাকে স্বচ্ছ, ক্রমশ গাঢ় হয়। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের ও নিম্ফ একটু বড় হলে বহিঃকঙ্কাল আঁটসাট হয়ে দেহবৃদ্ধি রহিত করে দেয়। তখন দেহবৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে পুরনে বহিঃকঙ্কাল মোচন বা মোল্টিং (molting) প্রক্রিয়ায় ত্যাগ করে ২য় ধাপের নিম্ফে পরিণত হয় । পরবর্তীতে আরও ৩ বার খোলস মোচনের পর পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-এ রূপান্তরিত হয়। দ্বিতীয় ধাপের নিম্ফে ক্ষুদ্রাকায় ডানা প্যাড (wing pad) থেকে ডানা সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটে । প্রতিবার খোলস মোচনের পর নিম্ফ দেখতে পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-এর মতো দেখায়। তা ছাড়া এদের পরিস্ফুটনে কোনো বিশ্রাম দশাও নেই। পঞ্চম বার খোলস মোচনের মাধ্যমে নিম্ফ পরিণত ঘাসফড়িং হয়ে উঠে দুটি মোচনের মধ্যবর্তী দশাকে ইনস্টার (instar) বলে । ঘাসফড়িং-এর রূপান্তর সম্পন্ন হতে প্রায় দুমাস সময় লাগে।

রূপান্তরে হরমোনের ভূমিকাঃ

ঘাসফড়িং-এর সুষ্ঠু রূপান্তরে বিভিন্ন হরমোনের মিথস্ক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মস্তিষ্কের কিছু অংশে এবং স্নায়ুরজ্জুর গ্যাংগলিয়া বিভিন্ন স্নায়ু-সংবেদী, হরমোন উৎপন্নকারী কোষ বহন করে। এসব কোষ প্রোথোরাসিকোট্রপিক হরমোন (PTTH) উৎপন্ন করে। মস্তিষ্কের পেছনে কর্পোরা অ্যালাটা নামে একজোড়া অংশে স্নায়ু- সংবেদী কোষগুলোর অ্যাক্সন প্রেরিত হয়। কর্পোরা অ্যালাটা PTTH জমা ও ক্ষরণ করে এবং জুভেনাইল হরমোন (juvenile hormone) নামে এক ধরনের হরমোন উৎপন্ন করে। PTTH হিমোলিম্ফের মাধ্যমে প্রোথোরাসিক গ্রন্থিতে বাহিত হয় । এ গ্রন্থি PITH-এর প্রতি সাড়া দিয়ে একডাইসন (ccdysone) বা মোচন হরমোন (molting hormone) উৎপন্ন করে। একভাইসনের প্রভাবে মোচন ক্রিয়া শুরু হয় এবং পুরনো কিউটিকল মোচিত হয় (এ প্রক্রিয়ার নাম একডাইসিস)