Course Content
অধ্যায় ২: প্রাণীর পরিচিতি (Introduction to Animals)
0/35
অধ্যায় ৩: মানব শারীরতত্ত্ব – পরিপাক ও শোষণ (Human Physiology – Digestion and Absorption)
অধ্যায় ৪: মানব শারীরতত্ত্ব – রক্ত ও সঞ্চালন (Human Physiology – Blood and Circulation)
অধ্যায় ৫: মানব শারীরতত্ত্ব – শ্বাসক্রিয়া ও শ্বসন (Human Physiology – Respiration and Breathing)
অধ্যায় ৬: মানব শারীরতত্ত্ব – বর্জ্য ও নিষ্কাশন (Human Physiology – Excretion and Elimination)
অধ্যায় ৭: মানব শারীরতত্ত্ব – চলন ও অঙ্গচালনা (Human Physiology – Movement and Locomotion)
অধ্যায় ৮: মানব শারীরতত্ত্ব – সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ (Human Physiology – Coordination and Control)
অধ্যায় ৯: মানব জীবনের ধারাবাহিকতা (Continuity of Human Life)
অধ্যায় ১০: মানবদেহের প্রতিরক্ষা (Defense Mechanisms of the Human Body)
অধ্যায় ১১: জীনতত্ত্ব ও বিবর্তন (Genetics and Evolution)
অধ্যায় ১২: প্রাণীর আচরণ (Animal Behavior)
জীববিজ্ঞান 2য় পত্র HSC Biology 2nd paper Revision Note
About Lesson

হাইড্রার খাদ্য গ্রহণ ও পরিপাক প্রক্রিয়া
হাইড্রার খাদ্যঃ
হাইড্রা মাংশাসী প্রাণী। এরা প্রধানতঃ সাইক্লোপস, ড্যাফনিয়া ইত্যাদি ক্রাসটেসিয়া জাতীয় ক্ষুদ্রাকার আর্থোপডা পর্বের প্রাণী ভক্ষণ করে। তাছাড়া হাইড্রা মাছের ডিম, কীট-পতঙ্গের লার্ভা ও অন্যান্য কিছু কিছু আণুবীক্ষণিক প্রাণী খেয়ে থাকে।

হাইড্রার খাদ্য গ্রহণ পদ্ধতিঃ
ক্ষুধার্ত হলে হাইড্রা পাচাকতির সাহায্যে কোন তলের সাথে সংলগ্ন হয়ে কর্ষিকাগুলাে পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে শিকারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।

এমন অবস্থায় কোন খাদ্য বা প্রাণী বা শিকার কাছে আসলে কর্ষিকার নিডােব্লাস্ট কোষগুলাে থেকে অসংখ্য নিমাটোসিস্ট শিকারের প্রতি নিক্ষিপ্ত হয়।

ভলভ্যান্ট নেমাটোসিস্টগুলাে শিকারের উপাঙ্গাসমূহ পেঁচিয়ে ধরে এবং পেনিট্র্যান্ট নিমাটোসিস্ট শিকারের দেহে হিপ্নোটক্সিন নামক বিষাক্তরস প্রবেশ করিয়ে তাকে অবশ করে ফেলে। এসময় অন্যান্য কর্ষিকাগুলাে শিকার ধরতে সাহায্য করে।

মুখছিদ্রের চারপাশে মিউকাস গ্রন্থি পিচ্ছিল মিউকাস নিঃসৃত করে খাদ্য গলাধঃকরণে সহায়তা করে। হাইপােস্টোম এবং দেহপ্রাচীরের কোষগুলাের সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমে খাদ্য সিলেন্টেরণে প্রবেশ করে।

পরিপাক (Digestion)
যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অদ্রবণীয়, অশােষণীয়, জটিল খাদ্য নির্দিষ্ট উৎসেচকের প্রভাবে আর্দ্র-বিশ্লেষিত হয়ে দ্রবণীয়, শোষণীয়, সরল খাদ্যে পরিণত হয়, তাকে পরিপাক বলে।

হাইড্রার খাদ্য পরিপাক পদ্ধতিঃ
হাইড্রার মুখছিদ্রের চারদিকে অবস্থিত পেশী-আবরণী কোষ প্রসারিত হয়েমুখছিদ্র খুলে যায়। এসময় কর্ষিকার সাহায্যে খাদ্য মুখের ভিতর দিয়ে সিলেন্টেরণে প্রবেশ করলে সিলেন্টেরণে খাদ্য পরিপাক হয়। এন্ডােডার্মের গ্রন্থিকোষমূহ থেকে উৎসেচক এবং মিউকাস নিঃসৃত হয়। ফ্লাজেলাযুক্ত পেশী আবরণী কোষ সমূহের ফ্লাজেলা আন্দোলনের দ্বারা সিলেন্টেরণের মধ্যে জীবিত খাদ্য মারা যায় ও কিছুটা চূর্ণ বিচূর্ণ হয় এবং উৎসেচক ও মিউকাসের সাথে মিশ্রিত হয়। ফলে সিলেন্টেরণের মধ্যে খাদ্য আংশিক পরিপাক হয়।

হাইড্রায় দুই ধরনের পরিপাক সংঘটিত হয়।যথাঃ
(ক) বহিঃকোষীয় পরিপাক ও (খ) অন্তঃকোষীয় পরিপাক।

(ক) বহিঃকোষীয় পরিপাক
কোন নির্দিষ্ট কোষের অভ্যন্তরে পরিপাক না হয়ে কোষের বাইরে কোন নালী বা থলির মধ্যে যে পরিপাক সংঘটিত হয় তাকে আন্তঃকোষীয় বা বহিঃকোষীয় পরিপাক বলে।

হাইড্রার সিলেন্টেরণে আন্তঃকোষীয় বা বহিঃকোষীয় পরিপাক পদ্ধতিতে খাদ্যের কিছুটা পরিপাক ঘটে। সিলেন্টরণে এই আংশিক পরিপাককৃত খাদ্য এরপর ফ্যাগােসাইটোসিস পদ্ধতিতে হাইড্রার এন্ডােডার্মের ক্ষণপদযুক্ত পেশীআবরণী কোষসমূহে প্রবেশ করে।এই কোষের অভ্যন্তরে খাদ্যগহ্বরে খাদ্য জমা হয় ও পরিপাক হয়।

(খ) অন্তঃকোষীয় পরিপাক
কোনও নির্দিষ্ট কোষের অভ্যন্তরে খাদ্য পরিপাক হওয়ার পদ্ধতিকে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে। হাইড্রার ক্ষণপদযুক্ত পেশী আবরণী কোষের অভ্যন্তরে অন্তঃকোষীয় পরিপাক ঘটে।

পরিশােষণ (Absorption):
পরিপাককৃত সরল খাদ্য অর্থাৎ এ্যামাইনাে এসিড, গ্লুকোজ এবং ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারল ক্ষণপদযুক্ত পেশী আবরণী কোষের সাইট্রোপ্লাজমে শােষিত হয়।

অপর পক্ষে অপাচ্য বর্জ্যপদার্থ পানির সাথে মুখছিদ্রের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। সুতরাং হাইড্রার সিলেন্টেরণে আন্তঃ বা বহিঃকোষীয় এবং ক্ষণপদযুক্ত পেশী আবরণী কোষে অন্তঃকোষীয় পরিপাক সম্পাদিত হয়।