Course Content
পঞ্চম অধ্যায়: খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক (Food, Nutrition, and Digestion)
0/17
ষষ্ঠ অধ্যায় : জীবে পরিবহণ (Transport in Living Organisms)
0/21
সপ্তম অধ্যায় : গ্যাসীয় বিনিময়
0/12
অষ্টম অধ্যায় : রেচন প্রক্রিয়া
0/12
দশম অধ্যায় : সমন্বয়
0/13
একাদশ অধ্যায় : জীবের প্রজনন
0/10
দ্বাদশ অধ্যায় : জীবের বংশগতি ও বিবর্তন
0/11
ত্রয়োদশ অধ্যায়: জীবের পরিবেশ
0/10
জীব বিজ্ঞান SSC Online
About Lesson

সাধারণত যে সকল সবুজ উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে তাদেরকে স্বভোজী
বলা হয়। কিন্তু পরিবেশতাত্তি¡ক দিক থেকে চিন্তা করলে দেখা যায়, সবুজ উদ্ভিদসহ কোন জীবই স্বনির্ভর নয়।
জীবন ধারণের জন্য সবুজ উদ্ভিদ, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ ও অন্যান্য উদ্ভিদ ও জীবজন্তু একে অপরের দ্বারা প্রভাবিত ও
কমবেশি নির্ভরশীল। প্রাণীকুল শ্বসনক্রিয়া দ্বারা যে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ত্যাগ করে সবুজ উদ্ভিদ
সালোকসংশ্লেষণের জন্য তা ব্যবহার করে এবং দিবাভাগে যে অক্সিজেন গ্যাস ত্যাগ করে, শ্বসনের জন্য প্রাণিকুল তা
ব্যবহার করে। তাছাড়া ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও বিভিন্ন প্রকার জীবাণু দ্বারা গাছপালা, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ বিভিন্নভাবে
প্রভাবিত হয়। তাই বলা যায় জীবজগতের প্রতিটি সদস্যই একে অপরের উপর নির্ভরশীল। প্রাণী ও গাছপালার মধ্যে
বিদ্যমান জৈবিক সম্পর্কগুলোকে সহাবস্থান নামে আখ্যায়িত করা হয়। আর পরস্পর সম্পর্কযুক্ত
জীবগুলোকে সহাবস্থানকারী বলা হয়। এ সহাবস্থানকারী জীবগুলোর মধ্যে যে ক্রিয়া বিক্রিয়া ঘটে তাকে
মিথস্ক্রিয়া বলা হয়। পরিবেশ বিজ্ঞানী ওডাম জীবকূলের এ আন্তঃনির্ভরশীল সম্পর্ককে দু’ভাগে ভাগ করেছেন।
যথা- ১। ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া এবং ২। ঋনাত্মক আন্তঃক্রিয়া
ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে।
ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়ায় সহযোগীদ্বয়ের যে কোনো একটি বা উভয়েই উপকৃত হতে পারে। ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়াকে দু’ভাগে
ভাগ করা হয়। যেমনমিউচুয়ালিজম- যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি সহযোগীর উভয়ই একে অন্যের দ্বারা উপকৃত হয় তাকে মিউচুয়ালিজম বলে।
উদাহরণ স্বরূপ মৌমাছি, প্রজাপতি ফুলের মধু আহরণের জন্য ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ায় এবং বিনিময়ে ফুলের পরাগায়ন
ঘটে। বাঁদুড় ফল খেয়ে বাঁচে এবং মল ত্যাগের সাথে ফলের বীজও ত্যাগ করে। এভাবে বীজের স্থানান্তর হয় এবং উদ্ভিদের
বিস্তার ঘটে। রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়া শিম জাতীয় উদ্ভিদেরশিকড়ে অবস্থান
করে নডিউলতৈরি করে এবং বিনিময়ে বায়ুমন্ডলীয় নাইট্রোজেনকে সেখানে সংবন্ধন করে। এ
নাইট্রোজেন সহযোগী শিম উদ্ভিদ থেকে শর্করা জাতীয় খাদ্য পেয়ে থাকে।
কমেনসেলিজম- যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি সহযোগীর একজন উপকৃত হয় কিন্তু আরেক জন উপকৃত না হলেও অপকৃত হয় না
তাকে কমেনসেলিজম বলা হয়। যেমন- কাষ্ঠল লতা খাদ্যের জন্য আশ্রয় দানকারী উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে না এবং এরা
আশ্রয়দাতার কোনো ক্ষতিসাধনও করে না। কিছু শৈবাল অন্য উদ্ভিদের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করে কিন্তু আশ্রয়দাতার
কোন ক্ষতি করে না। কাঠ বিড়ালী গাছের ডালে ডালে থাকে কিন্তু গাছের কোন ক্ষতি করে না।
ঋনাত্মক আন্তঃক্রিয়া : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অথবা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাকে ঋনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে।
ঋনাত্মক আন্তঃক্রিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- শোষণ, প্রতিযোগিতা, অ্যান্টিবায়োসিস।
শোষণ : এক্ষেত্রে একটি জীব অন্য জীবকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নিজের অধিকার
ভোগ করে। যেমন- স্বর্ণলতা উদ্ভিদ হস্টোরিয়া নামক চোষক অঙ্গের মাধ্যমে আশ্রয়দাতা উদ্ভিদ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে

প্রতিযোগিতা : কোন নির্দিষ্ট স্থানে আলো, বাতাস, পানি ও খাদ্যের জন্য জীবসমূহের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। এ
প্রতিযোগিতায় যারা সবল তারাই টিকে থাকে।

Web capture 4 12 2023 214718

অ্যান্টিবায়োসিস : একটি জীব কর্তৃক সৃষ্ট জৈব রাসায়নিক পদার্থের কারণে যদি অন্য জীবের বৃদ্ধি ও বিকাশ আংশিক বা
সম্পূর্ণরূপে বাধাগ্রস্থ হয় অথবা মৃত্যু ঘটে তখন সে প্রক্রিয়াকে অ্যান্টিবায়োসিস বলে। অণুজীবের মধ্যে এ ধরনের সম্পর্ক
অনেক বেশি।
উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান যে, পরিবেশে বিদ্যমান জীবের মধ্যে প্রতিনিয়ত ক্রিয়া বিক্রিয়া হচ্ছে এবং প্রত্যেকটি
উপাদান পরস্পর আন্তঃসম্পর্কযুক্ত। এ উপাদানগুলোর যে কোনো একটির পরিবর্তন ঘটলে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট
হবে।