Course Content
অধ্যায় ২: ভেক্টর
0/14
পদার্থবিজ্ঞান ১ম পত্র HSC Physics Revision Note
About Lesson

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ আমরা মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G-এর মান নির্ণয় সম্পর্কে আলোচনা করব। মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G হল একটি গুরুত্বপূর্ণ ধ্রুবক যা নিউটনের মহাকর্ষীয় সুত্রে ব্যবহৃত হয়।

(Dear students, today we will discuss the determination of the gravitational constant G. The gravitational constant G is an important constant used in Newton’s law of gravitation.)

মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G কি? (What is the Gravitational Constant G?)

মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G হল একটি ধ্রুবক যা দুইটি ভরের মধ্যে আকর্ষণ বলের পরিমাণ নির্ণয় করে।

(The gravitational constant G is a constant that determines the magnitude of the attractive force between two masses.)

নিউটনের মহাকর্ষীয় সূত্র (Newton’s Law of Gravitation)

নিউটনের মহাকর্ষীয় সূত্র অনুযায়ী, দুইটি বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ বল সরাসরি তাদের ভরের গুণফল এবং উল্টো তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের সমানুপাতিক।

(According to Newton’s law of gravitation, the attractive force between two objects is directly proportional to the product of their masses and inversely proportional to the square of the distance between them.)

সূত্র (Formula)

মহাকর্ষীয় বলের সূত্রটি হল:

(The formula for the gravitational force is:)

𝐹=𝐺𝑚1𝑚2𝑟2

এখানে, F = মহাকর্ষীয় বল (Gravitational force), G = মহাকর্ষীয় ধ্রুবক (Gravitational constant), m1 এবং m2 = বস্তুর ভর (Masses of the objects), r = তাদের মধ্যবর্তী দূরত্ব (Distance between them).

মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G-এর মান নির্ণয় (Determination of the Value of G)

মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G-এর মান নির্ণয়ের জন্য ক্যাভেন্ডিশের পরীক্ষাটি ব্যবহার করা হয়।

(The Cavendish experiment is used to determine the value of the gravitational constant G.)

ক্যাভেন্ডিশ পরীক্ষা (The Cavendish Experiment)

এই পরীক্ষায় একটি অনুভূমিক বার ব্যবহার করা হয় যার দুই প্রান্তে দুইটি ভর স্থাপন করা হয়। বারটির মধ্যভাগে একটি তার দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

(In this experiment, a horizontal bar is used with two masses placed at its ends. The bar is suspended at its middle with a wire.)

যখন বড় ভরগুলো ছোট ভরগুলির কাছে আনা হয়, তখন ছোট ভরগুলির দিকে আকর্ষণ সৃষ্টি হয় এবং বারটি ঘুরে যায়। তারপরে এই ঘূর্ণনের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়।

(When larger masses are brought close to the smaller masses, an attraction is created towards the smaller masses, causing the bar to rotate. The amount of this rotation is then measured.)

পরীক্ষার উপকরণ (Experimental Apparatus)

১. অনুভূমিক বার (Horizontal bar) ২. ছোট এবং বড় ভর (Small and large masses) ৩. স্থিতিস্থাপক তার (Torsion wire) ৪. দূরত্ব পরিমাপক যন্ত্র (Distance measuring instrument) ৫. ঘূর্ণন পরিমাপক যন্ত্র (Rotation measuring instrument)

(1. Horizontal bar 2. Small and large masses

  1. Torsion wire
  2. Distance measuring instrument
  3. Rotation measuring instrument)

পরীক্ষার ধাপ (Steps of the Experiment)

১. অনুভূমিক বারটির দুই প্রান্তে ছোট ভর স্থাপন করা হয় এবং বারটির মধ্যভাগে তার দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

(Small masses are placed at both ends of the horizontal bar, and the bar is suspended from its middle with a wire.)

২. বড় ভরগুলো ছোট ভরগুলির কাছে আনা হয়, যাতে আকর্ষণ সৃষ্টি হয় এবং বারটি ঘুরে যায়।

(The large masses are brought near the small masses to create an attraction, causing the bar to rotate.)

৩. ঘূর্ণনের পরিমাণ পরিমাপ করা হয় এবং সেই থেকে টরশন কনস্ট্যান্ট নির্ণয় করা হয়।

(The amount of rotation is measured, and from that, the torsion constant is determined.)

৪. এই ডেটা ব্যবহার করে G-এর মান নির্ণয় করা হয়।

(Using this data, the value of G is determined.)

পরিমাপ এবং গণনা (Measurement and Calculation)

ক্যাভেন্ডিশ পরীক্ষার মাধ্যমে ঘূর্ণনের কোণ (θ), টরশন কনস্ট্যান্ট (κ), ভরগুলির মান (m1 এবং m2), এবং দূরত্ব (r) পরিমাপ করা হয়।

(Through the Cavendish experiment, the angle of rotation (θ), torsion constant (κ), masses (m1 and m2), and distance (r) are measured.)

মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G নির্ণয়ের সূত্রটি হল:

(The formula to determine the gravitational constant G is:)

𝐺=𝜅𝜃𝑟2𝑚1𝑚2

উপসংহার (Conclusion)

মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G-এর মান নির্ণয় একটি সূক্ষ্ম পরীক্ষা যা অনেক সাবধানতা ও নির্ভুলতা প্রয়োজন।

(The determination of the gravitational constant G is a delicate experiment requiring great caution and precision.)

এই পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা মহাকর্ষীয় বলের প্রকৃতি এবং এটি কিভাবে কাজ করে তা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি।

(Through this experiment, we can better understand the nature of gravitational force and how it works.)

 

মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মান নির্ণয়ের জন্য অনেকগুলো পদ্ধতি আছে। তবে এখানে আমরা ক্যাভেন্ডিসের পদ্ধতি আলোচনা করব ।

ক্যাভেন্ডিসের পদ্ধতি (Cavendish’s method) : 

1798 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ক্যাভেন্ডিস মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মান নির্ণয়ের জন্য একটি ব্যবর্ত তুলা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। তাঁর নাম অনুসারে এই পদ্ধতিকে ক্যাভেন্ডিসের পদ্ধতি বলা হয়।

9k=
চিত্র : ৭.২

যন্ত্রের বর্ণনা: 

এই যন্ত্রে সীসার তৈরি চারটি গোলক (A, B, C ও D) আছে। এদের মধ্যে A ও B ছোট এবং C ও D দুটি বড় গোলক[চিত্র ৭.২] । C এবং D একটি অনুভূমিক দণ্ড PQ-এর দু’প্রান্ত হতে ঝুলান হয়েছে। দণ্ডটি একটি উল্লম্ব অক্ষ XX’-এর সাথে যুক্ত থাকে। এই অক্ষ একটি চাকা W-এর সঙ্গে যুক্ত থাকে। চাকাটি বাহির হতে ঘুরানোর ব্যবস্থা থাকে। এর কিছুটা নিচে একই অক্ষে একটি ব্যবর্তন শীর্ষ ( torsion head) H হতে ব্যবর্তন তারের (T) সাহায্যে একটি হাল্কা দণ্ড RS ঝুলান আছে। RS-এর দু’প্রান্ত হতে দুটি ছোট সমান ভরের গোলক A ও B ঝুলান আছে। A, B এবং C, D একই অনুভূমিক তলে থাকে। T ব্যবর্তন তারের সাথে একটি দর্পণ (E) লাগানো থাকে। একটি আলোক উৎস (L) হতে দর্পণের উপর আলোক রশ্মি আপতিত করানো হয় এবং প্রতিফলিত রশ্মি একটি স্কেলের (S) উপর নিক্ষেপ করানো হয়। স্কেলের উপর প্রতিফলিত আলোক রশ্মির সরণ পরিমাপ করে ব্যবর্তন তারের মোচড় কোণ পরিমাপ করা হয়।

 

Z
চিত্র : ৭.৩

 

কার্যপদ্ধতি :

 প্রথমে চাকা W-এর সাহায্যে PQ দণ্ডকে ঘুরিয়ে বড় গোলক দুটিকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয় যাতে ছোট গোলকের উপরে প্রভাব না পড়ে। এই অবস্থায় স্কেলে দর্পণ E হতে প্রতিফলিত রশ্মির অবস্থানের পাঠ নেয়া হয়। এরপর বড় গোলক দুটিকে ছোট গোলক দুটির কাছাকাছি অবস্থানে আনা হয়। প্রত্যেক বড় গোলক (C বা D) তার নিকটে অবস্থিত ছোট গোলকের (A বা B) উপর একটি আকর্ষণ বল প্রয়োগ করে। সমান ও বিপরীতমুখী এই দুটি বল একটি বিক্ষেপী দ্বন্দ্বের (deflecting couple) সৃষ্টি করে যার ফলে RS দন্ডটি একটি ক্ষুদ্র কোণে ঘুরতে বাধ্য হয়। সুতরাং ব্যবর্তন তারে পাক পড়ে। তারটি এর স্থিতিস্থাপকতা ধর্মের জন্য বিপরীতমুখী প্রত্যায়নী দ্বন্দ্বের (restoring couple) সৃষ্টি করে দণ্ডটিকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে সচেষ্ট হয়। দুটি পরস্পর বিপরীতমুখী দ্বন্দ্বের ক্রিয়ায় দণ্ডটি একটি সাম্য অবস্থানে আসে। এই অবস্থায় স্কেলে দর্পণ হতে প্রতিফলিত রশ্মির নতুন অবস্থানের পাঠ নেয়া হয়। প্রথম পাঠ ও দ্বিতীয় পাঠের পার্থক্য হতে দণ্ডের কৌণিক বিক্ষেপ 𝜃 নির্ণয় করা হয়। এরপর বড় গোলক দুটির অবস্থান [চিত্র ৭.৩] পূর্ব অবস্থান (K, m)-এর বিপরীত পার্শ্বে করা হয়।[চিত্রে K’, m´ অবস্থান]। এভাবে ঘুরিয়ে দণ্ডের কৌণিক বিক্ষেপের মান বের করা হয়। পরিশেষে এই দুটি বিক্ষেপের গড় মান নির্ণয় করা যায় । 

 

হিসাব বা গণনা : 

মনে করি,

 প্রত্যেকটি বড় গোলকের ভর =M 

প্রত্যেকটি ছোট গোলকের ভর = m

RS দণ্ডের দৈর্ঘ্য = 2l

দণ্ডটির সাম্যাবস্থায় বড় ও ছোট্ গোলকের কেন্দ্রবিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব = d 

A ও C গোলকের মধ্যকার আকর্ষণ বল, 

𝐹=𝐺𝑀𝑚𝑑2

 B এবং D গোলক দুটির মধ্যে অনুরূপ আকর্ষণ বল বিদ্যমান আছে। এই দুটি সমান ও বিপরীতমুখী বল একটি দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে । 

অতএব, ব্যবর্তন শীর্ষ H সাপেক্ষে বিক্ষেপী দ্বন্দ্বের মোমেন্ট

=𝐹×2𝑙=𝐺𝑀𝑚𝑑2×2𝑙

দন্ডটি যদি ‘𝜃‘ কোণে বিচ্যুত হয় তাহলে মোচড়ের জন্য ব্যবর্তন তারে  (T) 

প্রত্যায়নী দ্বন্দ্বের মোমেন্ট =𝜏𝜃

এখানে 𝜏 = প্রতি ডিগ্রী বিক্ষেপের জন্য প্রত্যায়নী দ্বন্দ্বের মোমেন্ট। 

সাম্যাবস্থায়, বিক্ষেপী দ্বন্দ্বের মোমেন্ট = প্রত্যায়নী দ্বন্দ্বের মোমেন্ট।

 বা, 𝐺𝑀𝑚𝑑2×2𝑙=𝜏𝜃 

:- 𝐺=𝜏𝜃𝑑22𝑙𝑚𝑚

এখন 𝜃, d, 2l, M এবং m পরীক্ষা হতে জানা যায়। 𝜏 -এর মান জানা থাকলেই G-এর মান পাওয়া যাবে। 

𝜏-এর মান নির্ণয় করার জন্য বড় দুটি গোলককে সরিয়ে ফেলি। তারপর ছোট দুটি গোলকসহ RS দণ্ডকে ব্যবর্তন তার T-এর সাপেক্ষে ব্যবর্তন দোলনে দোলাই এবং দোলনকাল নির্ণয় করি। যদি দোলনকাল T হয়, তবে,

𝑇=2𝜋𝐼𝜏

বা, 𝑇2=4𝜋2𝐼𝜏

 𝜏=4𝜋2𝑙𝑇2

 সমীকরণ (6) হতে পাই, 

𝐺=4π2Iθd2𝑇2×2𝑙×𝑀𝑚=2𝜋2𝐼𝜃𝑑2𝑇2×𝑙×𝑀𝑚

সমীকরণ (7)-এর ডান পাশের সকল রাশির মান জানা থাকায় G-এর মান বের করা যায়। বিজ্ঞানী ক্যাভেন্ডিস এ পরীক্ষা বারবার পুনরাবৃত্তি করেন এবং G-এর গড় মান বের করেন। এর লব্ধ মান হল 

G = (6.754 ± 0.41) × 10-11 N-m² kg-2