স্টোকস এর সূত্র কি? (What is Stokes’ Law?)
স্টোকস এর সূত্র একটি গোলাকার বস্তু যখন সান্দ্র প্রবাহীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন তার উপর ক্রিয়াশীল সান্দ্রতা বলের পরিমাপ নির্ধারণ করে। এই সূত্রটি সান্দ্রতার সাথে সম্পর্কিত।
(Stokes’ Law determines the viscous force acting on a spherical object as it moves through a viscous fluid. This law is related to viscosity.)
স্টোকস এর সূত্রের গাণিতিক প্রকাশ (Mathematical Expression of Stokes’ Law)
স্টোকস এর সূত্রটি গাণিতিকভাবে প্রকাশ করা যায়:
(Stokes’ Law can be mathematically expressed as:)
𝐹=6𝜋𝜂𝑟𝑣
এখানে, F = সান্দ্রতা বল (Viscous force), η = প্রবাহীর গতি সান্দ্রতা (Dynamic viscosity of the fluid), r = গোলাকার বস্তুর ব্যাসার্ধ (Radius of the spherical object), v = বস্তুর বেগ (Velocity of the object).
স্টোকস এর সূত্রের প্রমাণ (Derivation of Stokes’ Law)
স্টোকস এর সূত্রের প্রমাণটি নির্ভর করে নিম্নলিখিত ধারণাগুলির উপর:
(The derivation of Stokes’ Law relies on the following concepts:)
- প্রবাহী একটি সান্দ্র প্রবাহীর মধ্য দিয়ে বস্তুর সঞ্চালন।
- বস্তুর গতি এবং প্রবাহীর গতি সান্দ্রতার মধ্যে সম্পর্ক।
- অভিকর্ষ বল, উত্তোলন বল এবং সান্দ্রতা বলের সমতা।
(The object moving through a viscous fluid. The relationship between the object’s velocity and the fluid’s dynamic viscosity. The balance between gravitational force, buoyant force, and viscous force.)
স্টোকস এর সূত্রের উদাহরণ (Example of Stokes’ Law)
ধরা যাক, একটি ছোট বল যার ব্যাসার্ধ 0.001 মিটার এবং গতি সান্দ্রতা 0.1 Pa·s সহ একটি প্রবাহীর মধ্যে 0.2 মিটার/সেকেন্ড গতিতে প্রবাহিত হয়। স্টোকস এর সূত্র অনুযায়ী, সান্দ্রতা বল নির্ণয় করতে হবে।
(Consider a small ball with a radius of 0.001 meters moving through a fluid with a dynamic viscosity of 0.1 Pa·s at a velocity of 0.2 meters/second. Using Stokes’ Law, determine the viscous force.)
𝐹=6𝜋𝜂𝑟𝑣 𝐹=6𝜋×0.1×0.001×0.2 𝐹=6×3.1416×0.0001×0.2 𝐹=0.000376992 N
সুতরাং, সান্দ্রতা বল 0.000376992 নিউটন।
(Therefore, the viscous force is 0.000376992 Newtons.)
স্টোকস এর সূত্রের ব্যবহার (Applications of Stokes’ Law)
স্টোকস এর সূত্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
(Stokes’ Law is used in various fields, such as:)
-
ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering): স্টোকস এর সূত্র ব্যবহার করে সান্দ্র প্রবাহীর মধ্য দিয়ে বস্তুর গতির পূর্বাভাস করা হয়। (In engineering, Stokes’ Law is used to predict the motion of objects through viscous fluids.)
-
জিওলজি (Geology): মাটির কণা বা সেডিমেন্টের পতন গতি নির্ণয়ে স্টোকস এর সূত্র ব্যবহৃত হয়। (In geology, Stokes’ Law is used to determine the settling velocity of soil particles or sediments.)
-
বায়োমেডিকেল (Biomedical): রক্ত প্রবাহে কোষ বা অণুজীবের চলাচল বোঝাতে স্টোকস এর সূত্র প্রয়োগ করা হয়। (In biomedical applications, Stokes’ Law is applied to understand the movement of cells or microorganisms in blood flow.)
স্টোকস এর সূত্রের সীমাবদ্ধতা (Limitations of Stokes’ Law)
স্টোকস এর সূত্রের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যেমন:
(Stokes’ Law has some limitations, such as:)
-
এটি শুধুমাত্র ল্যামিনার প্রবাহের জন্য প্রযোজ্য, যেখানে প্রবাহ স্তরিত এবং অশান্ত নয়। (It is applicable only to laminar flow, where the flow is smooth and not turbulent.)
-
এটি শুধুমাত্র ছোট এবং গোলাকার বস্তুর জন্য প্রযোজ্য। (It is applicable only to small and spherical objects.)
-
প্রবাহীর সান্দ্রতা স্থির এবং একগুণ হতে হবে। (The viscosity of the fluid must be constant and uniform.)
কোনো সান্দ্র মাধ্যম (তরল বা গ্যাস) দিয়ে যদি কোনো বস্তু গতিশীল হয় তাহলে এটি এর স্পর্শে থাকা প্রবাহী পদার্থের স্তরগুলোকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। এতে প্রবাহীর বিভিন্ন স্তরের মধ্যে আপেক্ষিক গতির সৃষ্টি হয়। ফলে গতিশীল বস্তুটির উপর একটি সান্দ্র বল কাজ করে। এ বল বস্তুর গতিকে মন্থর করতে চায় ।
স্টোক্স প্রমাণ করেন যে, ব্যাসার্ধের কোনো গোলক η সান্দ্রতার তরলের ভেতর দিয়ে চলার সময় বেগ প্রাপ্ত হলে তরলের সান্দ্রতার জন্য গোলকের গতিকে বাধাদানকারী বল F হবে,
𝐹=6𝜋 𝑟 𝜂 𝑣…. (7.22)
অর্থাৎ এ বল প্রবাহীর সান্দ্রতাঙ্কের সমানুপাতিক, গোলকের বেগের সমানুপাতিক এবং গোলকের ব্যাসার্ধের সমানুপাতিক । এ বল গোলকটি যে দিকে গতিশীল তার বিপরীত দিকে ক্রিয়া করবে। একে স্টোকসের সূত্র বলে। কোনো বস্তু যদি অভিকর্ষের প্রভাবে কোনো তরলের মধ্য দিয়ে পতিত হয়, তাহলেও স্টোকসের সূত্র ( 7.22) প্রযোজ্য হয়। তখন η হয় তরলের সান্দ্রতায়।
উল্লেখযোগ্য যে স্টোকসের সূত্র শুধু অসীম বিস্তৃতির (infinite extent ) প্রবাহীর বেলায় খাটে। যদি গোলকটি অত্যন্ত দ্রুত চলতে থাকে এবং এর ফলে প্রবাহীর প্রবাহ স্রোতরেখা গতি না হয় তাহলে এ সূত্র ভালো খাটবে না।